শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা। প্রায় ৩০% শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায়। মাতৃদুগ্ধ পান করা শিশু সপ্তাহে কমপক্ষে ১ বার এবং অন্যান্য শিশুরা প্রতি ২—৩ দিনে ১ বার মল ত্যাগ করা স্বাভাবিক ধরা হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দুই ধরনের যেমনঃ ফাংশনাল এবং অরগানিক। প্রায় ৯৫% ক্ষেত্রে ফাংকশনাল কোষ্ঠকাঠিন্য হয় এবং এক্ষেত্রে কোন মেডিক্যাল বা সার্জিক্যাল কারণ থাকে না।
ফাংকশনাল কোষ্টকাঠিন্যের ঝঁকি সমূহঃ
- শিশুদের শক্ত খাবার শুরু করার পর
- ফাইবার যুক্ত খাবার যেমন ফল মূল ও শাক—সবজি অপর্যাপ্ত গ্রহণ
- পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান না করা
- ফাষ্টফুড ও অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ
- টয়লেট প্রশিক্ষণ না দেওয়া এবং উপযুক্ত টয়লেটের ব্যবস্থা না থাকা
- আয়রন বা ক্যালসিয়াম জাতীয় ঔষধ সেবন
অরগানিক কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ সমূহঃ
- মেডিক্যাল— হাইপোথাইরয়েড, হাইপারক্যালসেমিয়া, সিষ্টিক ফাইব্রোসিস
- সার্জিক্যাল— হার্সপ্রাb&ক ডিজিজ, পরিপাকতন্ত্র বা মেরুদণ্ডের জন্মগত ত্রুটি সমূহ
শুরুতে শিশুরা মল আটকে রাখে ফলে মল শক্ত হতে থাকে, পেটে মল আস্তে আস্তে জমা হতে থাকে এরপর মল ত্যাগ করতে গেলে শক্ত মল বের হওয়ার সময় মলদ্বার ছিড়ে যায় এবং বাচ্চারা ভয়ে মল ত্যাগ করতে চায় না ফলে দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে।
শিশুদের কোষ্টকাঠিন্যের লক্ষণ সমূহঃ
- প্রতি সপ্তাহে তিনবারের কম মল ত্যাগ করা
- শক্ত ও শুষ্ক মল ত্যাগ করা
- ব্যাথা অনুভূত হওয়া
- পেট ফুলে যাওয়া
- পেটের ভিতর বা মলদ্বারে শক্ত মলের উপস্থিতি
এক বছরের কম বয়সের শিশুদের ক্ষেত্রে গত এক মাসে এবং এক বছরের বেশী বয়সের ক্ষেত্রে গত দুই মাসের মধ্যে উল্লিখিত দুই বা ততোধিক সমস্যা থাকলে ফাংকশনাল কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়।
প্রসাবের ইনফেকশনের সাথে কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্পর্ক রয়েছে। ফলে প্রসাবের R¦vলাপোড়া এবং ঘন ঘন প্রসাবের সম্যসা থাকতে পারে।
শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের ক্ষেত্রে বিপদ জনক লক্ষণ গুলি হচ্ছেঃ
- বয়স ৬ সপ্তাহের কম
- জন্মের ২৪—৪৮ ঘন্টা পরেও কালো পায়খানা না হওয়া
- ওজন কমে যাওয়া
- ঘন ঘন বমি হওয়া
- পেটে চাকা অনুভূতি হওয়া
- পেট ফুলে যাওয়া
- মলে রক্ত দেখা দেওয়া
শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসা সমূহঃ
- আশযুক্ত খাবার যেমন ফল—মূল এবং শাক—সবজি গ্রহণ
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা
- শিশুকে খেলাধুলায় উৎসাহ প্রদান
- টয়লেট প্রশিক্ষণ-খাবার গ্রহণের আধা ঘন্টার মধ্যে প্রতিদিন টয়লেটে বসানো
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মল নরম করার ঔষধ ব্যবহার
শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রতিরোধসমূহঃ
- সুষম খাদ্য গ্রহণ
- পর্যাপ্ত পানি পান
- খেলাধুলায় উৎসাহ প্রদান
- টয়লেটের অভ্যাস
মনে রাখতে হবেঃ
শিশুদের কোষ্টকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা, যদি এটি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা বিপদজনক লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরার্মশ গ্রহণ করবেন।
অধ্যাপক ডাঃ সুরাইয়া বেগম
Website: https://aalokhospitalbd.com

